পটের উপাদান (রং,কাগজ)
পট আকার একটা বিশেষ পদ্ধতি আছে। প্রাথমিক ভাবে দেখলে বলা যায় যে,ছবি আকার একটি অনন্য স্টাইল হল এই পটচিত্র।সমাজ বিবর্তন এর কারনে পটের বিষয়বস্তু চিন্তাভাবনা পট আঁকার আঙ্গিক অনেক বদলে গেছে। কতটা বা বদলে কীরকম হয়েছে তা জানতে হলে আগে পট কেমন ছিল তা জানা দরকার।
আগে যেভাবে পট আঁকা হত-
প্রবীন পটুয়া রা বলেন যে প্রথমদিকে পট আঁকা হত তালপাতার উপর,তারপর কাপড়ের ওপর পট আঁকা শুরু হয়। যাকে সে সময় বলা হত কাঁথা-পট।এরপর পট আঁকা হত তুলট কাগজের উপর এবং পরবর্তী কালে পট আঁকা হত হ্যলফিল কাগজের উপর।
1)আকৃতি অনুযায়ী কাগজ পরপর জুড়ে পটের ক্ষেত্র প্রস্তুত করে তার উপর কাঙ্ক্ষিত পট আঁকা হত।
2)পটের কাহিনী চিত্রটি একটার নীচে একটা অংশে ফুলপাতা বর্ডার দিয়ে ভাগ করা থাকে।
3)পটুয়ারা যখন পট দেখান তখন এক হাতে ধরে থাকা কাঠি-গান সহযোগে বর্ণনার সঙ্গে ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে জড়িয়ে নিতে থাকেন এবং সেই সঙ্গে অন্য হাতে কাঠিতে ধরা পটের জড়ানো অংশ ধীরে ধীরে খুলে যেতে থাকে।সঙ্গীত-এর মাধ্যমে পটের এই কাহিনী ধীরে ধীরে একটা খোপ অনুযায়ী বর্ণনা করা হয়।
পটের রং
পট যেহেতু লোক চিত্রকলা, তাই তার আকার সরঞ্জাম এবং রং তেরি করা হয় দেশজ পদ্ধতিতে।
1) পট আঁকার জন্য মোটা বা সরু ধরনের তুলি করা হয় বাচ্চা ছাগলের ঘাড়ের বা পেটের লোম দিয়ে। বিশেষ করে সরু তুলির জন্য কাঠবেড়ালির লোম বা বেজির লেজের চুল ব্যবহার করা হয়।
2)তুলি রাখা হয় বাঁশের খাচিতে ।আর , রং গোলা হত মাটির খুরিতে।
3),রঙের উপকরণ ছিল দেশজ। হলদে রং সংগৃহীত হয় হলুদ বা এলামাটি থেকে। সবুজ রং পাওয়া যায় সিম পাতা বা হিঞ্চে শাকের রস দিয়ে। বেগুনি রং পাওয়া যায় জাম বা পুই মেচুড়ির রস থেকে।সাদা রঙের জন্য খড়িমাটি ও লালচে রঙের জন্য থাকত উনুনের গায়ে পোড়ামাটি। কালোর জন্য ভুষো কালি। ছাই রঙের জন্য উনুনের কয়লার ছাই।
এখন যেভাবে পট আঁকা হয়--
এখন মুলত ক্যামেল বা অন্য কোনো কোম্পানির জল রং ব্যবহার করে এই পট আঁকা হয়। আর কাগজের ও পরিবর্তন ঘটেছে। মোটা চাট পেপার ব্যবহার করা হয় পট আঁকতে।
Comments
Post a Comment